চীন ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরি করেছে

বন্ধুরা, বর্তমান সময়ে ভারতীয় বিমান বাহিনীর জন্য এক মহা সংকট নেমে এসেছে। যেখানে চীন ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরির মাধ্যমে বিশ্বকে চমকে দিয়েছে, সেখানে ভারত নিজের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হিমশিম খাচ্ছে। ভারতের ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? জানতে ভিডিওটি শেষ পর্যন্ত দেখুন।


ভারতীয় বিমান বাহিনী সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে যা ভারতের সার্বভৌমত্বের জন্য এক বড় হুমকি নির্দেশ করছে। এই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে ভারতের সামরিক শক্তির ভারসাম্যে একটি গুরুতর সংকট তৈরি হতে পারে।



বর্তমান সময়ে ভারতীয় বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমানের সংখ্যা ১৯৬৫ সালের পর থেকে সবচেয়ে কম অবস্থায় পৌঁছেছে। যুদ্ধবিমানের এই সংকট তৈরি হওয়ার মূল কারণ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মতো প্রধান প্রতিরক্ষা সরবরাহকারীদের বিভিন্ন সরবরাহে বিলম্ব।



ভারতীয় বিমান বাহিনী তার পুরনো মিগ-২১ যুদ্ধবিমান প্রতিস্থাপন করার জন্য তেজাস এমকে-২ জেট ফাইটারের ওপর নির্ভর করতে চেয়েছিল। তবে এর জন্য প্রয়োজন ১১০ কিলোনিউটন থ্রাস্ট উৎপাদনকারী শক্তিশালী ইঞ্জিন। এত শক্তিশালী ইঞ্জিন তৈরি করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং এবং বর্তমানে বিশ্বের হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি দেশের কাছেই এই প্রযুক্তি রয়েছে।



ভারত এই সংকট মোকাবিলা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে JE-404 ইঞ্জিন আমদানির পরিকল্পনা করে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ৮৩টি ইঞ্জিনের জন্য একটি চুক্তিও সম্পন্ন হয়। এই ইঞ্জিনগুলোর মাধ্যমে তেজাস তৈরি করে ভারত তাদের বহরে অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছিল। তবে, যুক্তরাষ্ট্র এখনো ইঞ্জিন সরবরাহ করতে পারেনি, যা এই প্রকল্পে বিলম্বের প্রধান কারণ।

এদিকে, চীন তাদের সামরিক বাহিনীতে পঞ্চম প্রজন্মের জে-২০ এবং জে-৩৫ যুদ্ধবিমান সফলভাবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। শুধু তাই নয়, তারা পাকিস্তানেও ৪০টি পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান রপ্তানি করেছে।


সম্প্রতি চীন বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান প্রকাশ্যে প্রদর্শন করেছে এবং এর টেস্ট ফ্লাইটও সম্পন্ন করেছে। এই যুদ্ধবিমান তৈরি এবং বহরে যুক্ত করার ক্ষেত্রে চীন যে উন্নত অবস্থানে রয়েছে, তা দেখে সারা বিশ্ব হতবাক।


ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমানগুলো গতিতে, স্টেলথ প্রযুক্তিতে, এবং এআই নির্ভরশীলতায় বর্তমান প্রজন্মের যুদ্ধবিমানকে ছাড়িয়ে গেছে। যেখানে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের সর্বোচ্চ গতি ম্যাক ১.৮ পর্যন্ত, ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান ম্যাক ৪-৫ গতি অর্জন করতে সক্ষম। এই নতুন মডেলে তিনটি ইঞ্জিন সংযোজন করা হয়েছে, যা আগে কখনো দেখা যায়নি।


এগুলো সম্পূর্ণরূপে এআই দ্বারা পরিচালিত। অর্থাৎ, পাইলট ছাড়াই যুদ্ধবিমান মিশন সম্পন্ন করতে পারবে। আপনি শুধু মিশনের ডিটেইলস প্রদান করবেন, এবং বিমান নিজেই সেই জায়গায় গিয়ে আক্রমণ করে ফিরে আসবে।


ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের স্টেলথ প্রযুক্তি এতটাই উন্নত যে, এটি রাডারের কাছে কার্যত অদৃশ্য। বর্তমান ফিফথ জেনারেশনের বিমান যেমন F-35 এর রাডার ক্রস সেকশন (RCS) মাত্র ০.০০০৫ স্কয়ার মিটার। কিন্তু ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের ক্ষেত্রে এই মান আরও কম, যা শত্রুর রাডারে শনাক্ত হওয়া প্রায় অসম্ভব করে তুলেছে।


এই যুদ্ধবিমানগুলো দীর্ঘ পরিসরে অভিযান পরিচালনা করতে সক্ষম। যেখানে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের পরিসর ১২০০ কিলোমিটার, ষষ্ঠ প্রজন্মের বিমান ২৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবে এবং সফলভাবে মিশন সম্পন্ন করে ফিরে আসবে।


ভারত বর্তমানে তেজাস এমকে-২ প্রকল্পে উন্নতি করার জন্য ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার ওপর নির্ভর করছে। ইসরাইল থেকে ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইঞ্জিন আমদানি করার পাশাপাশি রাশিয়া থেকে বিভিন্ন এয়ারফ্রেম সরবরাহ নেওয়া হচ্ছে।


তবে, চীনের মতো একটি উন্নত সামরিক প্রযুক্তি তৈরি করতে ভারতের এখনও অনেক দূর যেতে হবে। তেজাস দিয়ে ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের সাথে প্রতিযোগিতা করা কতটা সম্ভব হবে, তা সময়ই বলে দেবে।


চীনের এই সামরিক উন্নয়ন পশ্চিমা বিশ্বকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশ ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, যেখানে চীন একধাপ এগিয়ে গেছে।


এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় বিমান বাহিনীর জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। প্রতিরক্ষা খাতে শক্তিশালী প্রযুক্তি ও আধুনিক যুদ্ধবিমান অন্তর্ভুক্ত না করলে ভারতের সামরিক শক্তি বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়তে পারে।


চীন যেভাবে সামরিক প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারতেরও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। তবে, এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে শুধু প্রযুক্তি আমদানি নয়, নিজস্ব উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

POST-01: আম খাওয়ার ২০টি উপকারিতা

POST-02: আম খাওয়ার ২০টি অপকারিতা

POST-10: প্রতিদিন ডিম খাওয়ার ০৭ টি অপকারিতা (খন্ড-০১)